ফ্রিল্যান্সিং এর টুকরো গল্প [২] – সোজা আঙ্গুল ও বাঁকা আঙ্গুল

বাংলা ব্লগফ্রিল্যান্সিং এর টুকরো গল্প২১ ডিসেম্বর, ২০১৯

ফ্রিল্যান্সিং এর টুকরো গল্প [২] – সোজা আঙ্গুল ও বাঁকা আঙ্গুল

বেশ কয়েকবছর আগের কথা, একটা কাস্টম ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডেভেলপমেন্ট এর প্রোজেক্ট পাই ৭০০ ডলারের। এজ ইউজুয়াল ৫০০ ডলার আপফ্রন্ট নেই আর বাকিটুকু প্রজেক্ট ডেলিভারির সময় নিবো। তাছাড়া ক্লায়েন্ট এর ব্যবহার অনেক ভালো, এমন ক্লায়েন্টকে মাগনা কাজ করে দিতেও ভালো লাগে। (ক্লায়েন্ট ব্রাজিলিয়ান সুন্দরী ছিলো)

হাসিখেলা করে সাপ্তাহখানেক লাগলো প্রজেক্ট কমপ্লিট করতে। আমার একটা বাজে স্বভাব হচ্ছে, ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপমেন্টগুলা লোকাল সার্ভারে করি না। হয় ক্লায়েন্টের ডেভেলপমেন্ট সার্ভারে করি, না হলে আমার স্যান্ডবক্স সার্ভারে করি। যাই হোক প্রজেক্ট ডেলিভারি করে দিলাম। ক্লায়েন্ট অনেক হ্যাপি। ওয়েবসাইট ক্লায়েন্টের প্রোডাকশন সার্ভারে মুভ করে দিয়ে, এবার পালা বাকি ২০০ ডলার চাওয়ার।

সুন্দরী এবার কালনাগিনী হয়ে গেলো, টাকা দিবে না। এই প্রজেক্ট নাকি ৫০০ ডলারই এনাফ। আজব ব্যাপার, এমন কথা শুনে আমি তব্দা খেয়ে গেলাম। এই ছিলো তোর মনে সুন্দরী?

প্রথমে ভেবেছিলাম এরকম ক্লায়েন্টরে মাগনা কাজ করে দিলেও ভালো লাগে, বাট এই ২০০ ডলার ছেড়ে দিতে কষ্ট লাগছিলো। তো কি আর করার সুন্দরীরে নিয়ে একটু খেললাম।

সুন্দর করে মেসেজ পাঠিয়ে দিলাম যে, “তোমার ওয়েবসাইটে আমি একটা ব্যাকডোর রেখে দিয়েছি, তোমার ওয়েবসাইট আমি হ্যাক করবো না,  জাস্ট তোমাকে জানিয়ে রাখলাম।”। বেচারা সাথে সাথে রিপ্লাই দিলো, “What???”। তারপর একের পর এক মেসেজ। আমি সুন্দর করে কম্পিউটারটা বন্ধ করে নিজেকে নিজেই বললাম, খুব শীত পরেছে আজ, কম্বলের তলে যাই।

পরদিন সকালে (পড়ুন সন্ধ্যায়) ঘুম থেকে উঠে দেখি, পেমেন্ট পাঠিয়ে দিয়েছে উইথ ৩০ ডলার বোনাস। তারপর কয়েকশবার সর‍্যি বলে, ব্যাকডোর রিমুভ করার জন্য রিকুয়েস্ট করছে।

আমি আবার সুন্দর করে একটা মেসেজ লিখলাম,

I didn’t put any backdoor in your website, I was kidding.

ক্লায়েন্ট এর রিপ্লাই, “What???” সাথে এংরি ইমোজি।

যারা ব্যাকডোর কি জানেন না তাদের জন্য, ব্যাকডোর হলো ঘরের পিছনের দরজা। যা সাধারণত হ্যাকাররা কোন সিস্টেম হ্যাক করলে সেটাতে রেখে দেয়, যাতে পরেরবার খুব সহজেই সিস্টেমে ঢুকে পরতে পারে। অনেক ডেভেলপারও নিজের এক্সেস পারমিশন সিকিউর করার জন্য ব্যাকডোর রেখে দেয়। কিন্তু কথা হচ্ছে, এটা একটা আনইথিক্যাল কাজ, এগুলো করা ঠিক না।

এই টপিকের আরও কিছু পোস্টঃ

© সোলায়মান হায়দার